সরকারি কর্মচারীদের জন্য নতুন বেতন কাঠামো নির্ধারণে জাতীয় বেতন কমিশন গঠনের পর কার্যক্রম শুরু করেছে কমিশন। আগামী ছয় মাসের মধ্যে নতুন স্কেলের সুপারিশ জমা দেওয়ার কথা রয়েছে। সার্বিক বেতন কাঠামো নির্ধারণের পাশাপাশি গ্রেড কমানোর বিষয়েও ভাবছে কমিশন।
বর্তমানে সাধারণ নাগরিক, সরকারি চাকরিজীবী, সরকারি প্রতিষ্ঠান (স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানসহ) ও বিভিন্ন সংগঠন থেকে মতামত নিচ্ছে কমিশন—কীভাবে নতুন বেতন কাঠামো সাজানো যেতে পারে। একইভাবে অন্য একটি প্রশ্নে জানতে চাওয়া হচ্ছে, প্রস্তাবিত বেতন স্কেলে সর্বনিম্ন ও সর্বোচ্চ মূল বেতনের অনুপাত কী হওয়া উচিত, এবং বর্তমান কাঠামোয় কী ধরনের অসঙ্গতি রয়েছে।
কমিশনের এক সদস্য গণমাধ্যমকে জানান, *সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন বেতনের অনুপাত কমিয়ে বৈষম্য দূর করার বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে।* এ কারণে বিদ্যমান ২০টি গ্রেড পুনর্বিন্যাস করে মোট গ্রেড সংখ্যা কমানোর চিন্তাও চলছে। চার ক্যাটাগরিতে মতামত নেওয়ার পর কমিশন বিভিন্ন কমিটি ও সংগঠনের সঙ্গে মতবিনিময় করবে। যাচাই-বাছাই শেষে গ্রেড পুনর্বিন্যাসের বিষয়ে চূড়ান্ত সুপারিশ দেওয়া হবে।
পে স্কেল ২০১৫ বিশ্লেষণে দেখা গেছে, ৮ম (২২ হাজার) ও ৯ম গ্রেডে (২৩ হাজার) বেতনের ব্যবধান মাত্র ১,০০০ টাকা। একইভাবে ২০তম ও ১৯তম গ্রেডের মধ্যে ব্যবধান ২৫০ টাকা, ১৭তম (৯,০০০) ও ১৮তম (৮,৮০০) গ্রেডে ২০০ টাকা এবং ১২তম ও ১৩তম গ্রেডে ব্যবধান মাত্র ৩০০ টাকা। এই কম ব্যবধানের গ্রেডগুলো একীভূত করে গ্রেড সংখ্যা কমানোর আলোচনা চলছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, *মূল্যস্ফীতির চাপ ও জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধির কারণে* নিম্নগ্রেডের কর্মীদের টিকে থাকা ক্রমেই কঠিন হয়ে পড়ছে। তাই বেতনের ব্যবধান না কমালে অসন্তোষ বাড়বে। তাদের পরামর্শ, ভারতীয় কাঠামোর মতো গ্রেড পুনর্বিন্যাস বিবেচনা করা যেতে পারে।
ভারতে সরকারি চাকরিজীবীদের বেতন তিনটি ক্যাটাগরিতে—গ্রুপ-সি, গ্রুপ-বি ও গ্রুপ-এ—বিভক্ত, যেখানে মোট ১৮টি লেভেলে বেতন স্কেল নির্ধারণ করা হয়। লেভেল-১ সর্বনিম্ন এবং লেভেল-১৮ সর্বোচ্চ। বাংলাদেশও এমন কাঠামো অনুসরণ করলে বেতন বৈষম্য কমানো ও প্রশাসনিক কাঠামো সহজীকরণ সম্ভব হবে বলে মত বিশেষজ্ঞদের।